ইসলামী শরীয়াহর উদ্দেশ্য ও মূলনীতি

এডিটর’স নোট: ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ২০১৩ সালে ‘ইসলামী শরী’আতে আযীমাত ও রুখসত’ শিরোনামে একটি গবেষণাধর্মী বই প্রকাশিত হয়। বইটি লিখেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অলী উল্যাহ। পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শরীয়াহর বিধিবিধান পালনে দৃঢ়তা ও নমনীয়তার যে সুযোগ রয়েছে, তা এই বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বইটির প্রথম অধ্যায় থেকে একটি অংশ প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সিএসসিএস-এর পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।

*****

শরীয়াহর কোনো ‘নস’-এর সঠিক অর্থ বুঝতে হলে বা তার থেকে কোনো বিধান উদঘাটন করতে হলে শরীয়াহর মূল লক্ষ্য অনুধাবন করা জরুরি। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র সাধারণ অর্থ জানাই যথেষ্ট নয়। তাছাড়া শরীয়াহর কোনো মৌলিক বিধান নিয়ে গবেষণা করতে হলে মাকাসিদুস শরীয়াহ বা শরীয়াহর মূল লক্ষ্য জানা আবশ্যক। যেহেতু আমাদের গবেষণার বিষয় হলো ইসলামী শরীয়াহর দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান তথা ‘আযীমত’ ও ‌‘রুখসত’, সেহেতু সঙ্গত কারণেই মাকাসিদুস শরীয়াহ সমন্ধে কিছু মৌলিক ধারণা দেয়া জরুরি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর খেলাফত বা প্রতিনিধিত্ব ও উবূদিয়্যাত বা দাসত্ব করার জন্য এ পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব ঘটিয়েছেন। মানুষ যাতে এ মহান দায়িত্ব পালনে সক্ষম ও সচেষ্ট হয় সেজন্য সৃষ্টির প্রথম থেকেই তিনি তাদেরকে ফেরেশতা ও অন্যান্য সৃষ্টিকুল থেকে আলাদাভাবে বিশেষ বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছেন। আর তা হলো:

১. আল্লাহ তায়ালা মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি, ইচ্ছাশক্তি ও ভালো মন্দের পার্থক্য করার যোগ্যতা দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন।

২. যেহেতু মানুষের দেহ প্রথমত মাটি এবং পরে রক্ত-মাংসের সমন্বয় গঠিত তাই তার মধ্যে জৈব ও পাশবিক চাহিদা বিদ্যমান। এ কারণে তার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ, হত্যা-রাহাজানি, লোভ-লালসা ইত্যাদি খারাপ প্রবৃত্তি বিদ্যমান।

মানুষকে এ দুটি বিপরীতমুখী বিশেষণে বিশেষিত করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ অর্জনের পথ প্রদর্শন করছেন। সাথে সাথে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন— তিনি জীবন ও মৃত্যুকে পরীক্ষা করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। যারা এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারা সফলকাম হবে; পক্ষান্তরে যারা অকৃতকার্য হবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ হিসেবে তিনি পৃথিবীর প্রথম মানুষ বা মানব পিতা আদমকে (আ.) বেহেশতের মধ্যে নির্দিষ্ট গাছের কাছে যেতে নিষেধ করে পরীক্ষা করেছেন। শয়তানের কুমন্ত্রণার ফলে ভুলবশত তাঁর পদস্থলন ঘটল। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাঁকে বেহেশতের বাইরে অবস্থান করতে হয়। এখান থেকেই আদম (আ.) ও শয়তানের মধ্যকার শত্রুতা এবং তা পরবর্তীতে আদমসন্তান ও ইবলিসের বংশধরের মধ্যে স্থায়ী রূপ লাভ করে। শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মানুষ যাতে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে এবং তাদের ইহকালীন শান্তি এবং পরকালীন মুক্তি নিশ্চিত হয় সে জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণের মাধ্যমে শরীয়াহ প্রবর্তন করেছেন। এ শরীয়াহ প্রবর্তনের ধারাবাহিকতার পরিসমাপ্তি ঘটে শেষ নবী মুহাম্মদের (সা.) মাধ্যমে।

ইসলামী শরীয়াহর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে সীমালংঘন বা বাড়াবাড়ি ও শিথিলতা প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তাদের সাধ্যাতীত কোনো কাজের নির্দেশ দেন না এবং দ্বীন বা শরীয়াহ পালনকে তাদের জন্য কষ্টসাধ্য করতে চান না। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

“আল্লাহ কারো উপর এমন কোনো কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না, যা তার সাধ্যাতীত।”

[সূরা বাকারা: ২৮৬]

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,

“আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।”

[সূরা মায়েদা: ৬]

শরীয়াহর বিভিন্ন বিধান গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের মঙ্গল ও কল্যাণার্থেই শরীয়াহ প্রবর্তন করেছেন। তবে এ মঙ্গল বা কল্যাণ নির্ধারিত হবে আল্লাহ তায়ালার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে, বান্দার ইচ্ছার আলোকে নয়। কারণ, বান্দা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রবৃত্তি তাড়িত হয়ে সাময়িক বিবেচনায় কল্যাণ-অকল্যাণ নির্ধারণ করে থাকে; পরবর্তী জীবনের কথা চিন্তা করে না। আর আল্লাহ তায়ালা যেহেতু মানুষের স্রষ্টা, তাই তিনিই তাদের অস্থায়ী ও স্থায়ী কল্যাণ-অকল্যাণ সম্বন্ধে সম্যক ওয়াকিবহাল। যেমন কোনো শিল্পকর্মের ভালো-মন্দ, সুবিধা-অসুবিধা সংশ্লিষ্ট শিল্পীই ভালোভাবে অবগত, অন্য কেউ নয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুদভিত্তিক ব্যবসা, মানুষের খাদ্যদ্রব্য কুক্ষিগত করা, ঘুষ গ্রহণ করা ইত্যাদি উপায়ে সহজে অর্থ উপার্জন করে সম্পদশালী হওয়া যায়। যা সাময়িকভাবে খুবই ফলদায়ক ও কল্যাণকর মনে হয়। অথচ পরকালীন জীবনে এর যে ভয়াবহ পরিণাম ও করুণ পরিণতি হবে তা চিন্তা করলে কেউই এটাকে মঙ্গলজনক ভাবতে পারে না। এজন্য প্রত্যেক মুসলমানের মাকাসিদুস শরীয়াহ বা শরীয়াহর মূল লক্ষ্য জানা উচিত, যাতে সে নিজের কল্যাণ-অকল্যাণ অনুধাবন করতে সক্ষম হয়।

বান্দাদের যে সকল মঙ্গল ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য শরীয়াহ প্রবর্তন করা হয়েছে তা দুভাবে অর্জিত হওয়া সম্ভব: একটি হলো মঙ্গলজনক ও কল্যাণকর বিষয়গুলোকে অস্তিত্বে নিয়ে আসা, আর অন্যটি হলো তা টিকিয়ে রাখা বা সংরক্ষণের চেষ্টা করা। বাস্তবতার নিরিখে এগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আর তা হলো:

১. মৌলিক অত্যাবশ্যকীয়
২. সাধারণ অত্যাবশ্যকীয়
৩. শোভা বা সৌন্দর্যবর্ধক বিষয়।

এদের প্রত্যেকটির আবার রয়েছে কতিপয় পরিপূরক বা সম্পূরক বিষয়। তাছাড়া গুরুত্বের দিক দিয়ে প্রত্যেকটির মর্যাদাও এক রকম নয়। একটির সাথে অন্যটি সাংঘর্ষিক বা দ্বান্দ্বিক হলে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হলো।

১. মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয়

মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয় বলতে ঐ সকল বিষয়কে বুঝায় যার উপর মানুষের জীবন, সমাজের স্থিতি-স্থায়িত্ব, দ্বীন-দুনিয়ার মঙ্গল বা কল্যাণ নিহিত। এর একটি বিনষ্ট হয়ে গেলে বা কোনো ব্যত্যয় ঘটলে জীবন বিপন্ন হবে ও সমাজব্যবস্থা ব্যর্থতা ও বিশৃঙ্খলায় পর্যবসিত হবে। এ মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয় মোট পাঁচটি: ধর্ম, জীবন, জ্ঞান, বংশ ও সম্পদ। মানব সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনের নিমিত্তে উপরোক্ত পাঁচটি বিষয়কে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আসা ও তা যথাযথ সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা রয়েছে ইসলামী শরীয়ায় এবং এ লক্ষ্যে শরীয়ায় বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, আমাদের পূর্ববর্তী শরীয়ায়ও এর অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল।

ক) ধর্ম: দ্বীন বা ধর্ম মানবসভ্যতার একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ। তাই দ্বীনের অস্তিত্ব বিনির্মাণের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) প্রতি ঈমানের সাক্ষ্য দেয়া এবং এর আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি যেমন: ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস, রাসূলগণের উপর বিশ্বাস, কিতাবসমূহের উপর বিশ্বাস, পরকাল, পুনরুত্থান ও বিচার দিবসের উপর বিশ্বাসের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিশ্বাসের দাবি অনুযায়ী বাহ্যিক আমল তথা সালাত, যাকাত, সিয়াম ও হজ্বসহ অন্যান্য ইবাদত প্রবর্তন করা হয়েছে। এ সবের মাধ্যমে দ্বীন সুরক্ষিত হবে, মানুষের অবস্থার সার্বিক উন্নতি হবে এবং সমাজ একটি শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এ দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথাক্রমে দ্বীনের প্রতি দাওয়াত দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং দ্বীনের শত্রুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও তাদের সাথে লড়াই করার বিধান দেয়া হয়েছে। উপরন্তু যারা ধর্মদ্রোহী, প্রকাশ্যে পাপাচারী, মানুষের আকীদা-বিশ্বাসে সন্দেহ সৃষ্টিকারী ও আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী তাদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

খ) জীবন: মানুষের জীবনের অস্তিত্ব দানের জন্য বিবাহের প্রচলন করা হয়েছে। আর তা সুরক্ষার জন্য সুষম খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের বিধান দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে জীবন ধ্বংসকারী কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ও অন্যের জীবননাশ করা থেকে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এমনিভাবে রাষ্ট্রের উপর জনগণের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের বাধ্যবাধকতা, আত্মরক্ষার জন্য জিহাদের বিধান ও সামগ্রিকভাবে জীবন রক্ষার জন্য হত্যার পরিবর্তে হত্যা বা কিসাসের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে।

গ) জ্ঞান: মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার ‘আকল’ বা জ্ঞান। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এই জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন এবং এর মাধ্যমে অন্যান্য প্রাণী থেকে তাকে স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করেছেন। মানুষের জ্ঞান ও ‘আকল’ যাতে সমৃদ্ধ হয় সেজন্য তাকে চিন্তার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে ও জ্ঞানের অনুশীলন করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া সুষম খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে দৈহিক শক্তি অর্জন ও মেধা বিকাশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এ জন্যই কাজী বা বিচারককে ক্ষুধার্ত অবস্থায় বিচারকার্য পরিচালনা করতে নিষেধ করা হয়েছে ও নামাযের সময় খাদ্য উপস্থিত হলে ক্ষুধার্ত অবস্থায় নামায আদায় না করে আগে খাদ্য গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। জ্ঞান ও ‘আকল’ সমৃদ্ধ হওয়ার কারণেই মানুষের উপর আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় তিনি জ্ঞানী ও চিন্তাশীলদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে নিদর্শন ও চিন্তার খোরাক রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

“এও কি তাদেরকে সৎপথ দেখালো না যে আমি এদের পূর্বে ধ্বংস করেছি কত মানবগোষ্ঠী যাদের বাসভূমিতে এরা বিচরণ করতে থাকে? অবশ্যই এতে বিবেকসম্পন্নদের জন্য আছে নিদর্শন।”

[সূরা ত্বহা: ১২৮]

আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন,

“তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রজনী, দিবস, সূর্য এবং চন্দ্রকে; আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই নির্দেশে। অবশ্যই এতে বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিশ্চিত নিদের্শন।”

[সূরা নাহল: ১২]

এছাড়া যারা জ্ঞান সঞ্চালন করে না এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে না তাদেরকে তিনি নিকৃষ্ট জীব হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

“আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব সেই বধির ও মূক যারা কিছুই বুঝে না।”

[সূরা আনফাল: ২২]

মানব জীবনের এই মহা মূল্যবান সম্পদ তথা জ্ঞান যাতে কোনোভাবেই বিকৃত বা বিনষ্ট না হয় সেজন্য ইসলামী শরীয়ায় নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করাকে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে এবং তা হারাম করা হয়েছে। সাথে সাথে এ বিধান অমান্যকারীর জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

“হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কার্য। সুতরাং, তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।”

[সূরা মায়েদা: ৯০]

ঘ) বংশ: মানুষের বংশ রক্ষা করার জন্য শরীয়ায় বৈধ বিবাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে প্রত্যেকটি সন্তান তার পিতামাতার পরিচয় জানতে পারে এবং কেয়ামত পর্যন্ত বংশানুক্রমিক ধারা অব্যাহত থাকে। এ বিধানের মাধ্যমে পারিবারিক শৃঙ্খলাও অটুট থাকে। বৈধ বিবাহের ব্যবস্থা না থাকলে মানুষের পিতৃপরিচয় থাকতো না এবং মানুষ ও পশুর মধ্যে কোনো মৌলিক ব্যবধান খুঁজে পাওয়া যেত না। পিতৃপরিচয়হীন সন্তান পিতৃ ও মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয় এবং মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে বেড়ে ওঠে। ফলে সে একটি সুস্থ ও সুশৃঙ্খল সমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

আর বংশানুক্রমিক ধারা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য অবৈধ যৌনমিলন বা ব্যভিচারকে হারাম করা হয়েছে এবং তার জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিধান পর্যন্ত রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি, পবিত্র চরিত্রের অধিকারী কেউ যাতে অপবাদের শিকার না হয়, সেজন্য অপবাদকে হারাম করা হয়েছে ও তার শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এমনিভাবে বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্বকরণকেও হারাম করা হয়েছে।

ঙ) সম্পদ: আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সম্পদ মানুষের জন্য একটি বড় নেয়ামত। আল্লাহ তায়ালাই এর প্রকৃত মালিক। বান্দার কাছে তা আমানত হিসেবে শর্তাধীন মালিকানায় দেয়া হয়েছে মাত্র। মানুষ যাতে বৈধ সম্পদের মালিক হতে পারে সে লক্ষ্যে তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন ইত্যাদি। এছাড়া সম্পদ উপার্জনের জন্য তাদেরকে উৎসাহও দেয়া হয়েছে।

প্রত্যেক মানুষের কাজ পাওয়ার অধিকার প্রদান, সকল নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও বেকারত্ব দূরীকরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের উপর ন্যস্ত। শ্রম ও শ্রমিকের মর্যাদা প্রদান, ঘাম শুকানোর পূর্বেই শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ ও প্রয়োজনমাফিক শ্রমিকের মূল্য নির্ধারণের বিধান দেয়া হয়েছে। আর এ সম্পদ যাতে সুরক্ষিত থাকে সেজন্য চুরি, ডাকাতি, লুণ্ঠনসহ অন্যায়ভাবে অপরের সম্পদ হরণ বা বিনষ্ট করা ও যে কোনো ধরনের আত্মসাৎ হারাম করা হয়েছে এবং তার জন্য শাস্তি ও জরিমানার বিধান দেয়া হয়েছে। এছাড়া সম্পদ পবিত্র করার জন্য যাকাতের বিধান দেয়া হয়েছে। এবং সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য তা নির্বোধ ও পাগলের কাছে গচ্ছিত রাখতে বারণ করা হয়েছে।

২. সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয়

সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয় বলতে ঐ সকল বিষয়কে বুঝায় যা অর্জিত হলে মানুষ ইবাদত, মুয়ামালাতসহ (পারস্পরিক সম্পর্ক ও লেনদেন) যাবতীয় কাজ স্বচ্ছন্দে ও সাবলীলভাবে আঞ্জাম দিতে পারে, কোনো কষ্ট বা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় না। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটলে মানুষের জীবন বিপন্ন হয় না। তবে বিভিন্ন অসুবিধা ও সংকীর্ণতার মুখোমুখি হতে হয়। আর এই কষ্ট বা অসুবিধা সব সময় সামগ্রিক হয় না; বরং কখনো কখনো তা আপেক্ষিক হয়। সেক্ষেত্রে শরীয়াহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য আলাদা বিধানের ব্যবস্থা রেখেছে। মানুষ যাতে শরীয়ার নির্দেশানুযায়ী ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে অনায়াসে পথ চলতে পারে সেজন্য শরীয়াহ বিভিন্ন সুবিধাজনক বিধান চালু করেছে। যেমন ইবাদতের ক্ষেত্রে মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য শরীয়ায় রুখসতের বিধান দেয়া হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, অসুস্থতা ও ভ্রমণজনিত কারণে রমযানের রোযা রমযান মাসে না রেখে সুবিধাজনক অন্য যে কোনো সময়ে রাখার সুযোগ, ভ্রমণজনিত কারণে চার রাকাত নামায কসর করে দু’রাকাত আদায়, দুই ওয়াক্তের নামায একত্র করে এক ওয়াক্তে আদায়, অসুস্থতার কারণে বসে বসে নামায আদায়, পানির অবর্তমানে তায়াম্মুমের বিধান ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

অনুরূপভাবে মুয়ামালাতের ক্ষেত্রে বাইয়ে সালাম বা আগে টাকা নিয়ে পরে মাল দেয়ার বিধান, অগ্রিম শ্রম বা শিল্প বিক্রয়, ইজারা প্রথা, কম দামে ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রয়, পরিমাণ জানা নেই এমন বস্তু বিক্রয়, জমি বর্গা দেয়া, ফল ভাগাভাগির বিনিময়ে গাছ পরিচর্যা করতে দেয়া, যে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার জীবন পরিচালনা করা কষ্টকর তার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তালাক প্রথা ইত্যাদি বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া আদাত বা মানুষের স্বভাবিক জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশস্ততার বিধান রয়েছে। যেমন: পশুপাখি শিকার, উন্নতমানের হালাল পানাহার, গাড়ি ও বাড়ি ইত্যাদি উপভোগ করার বৈধতা আছে। এমনিভাবে অপরাধের শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে ভুলক্রমে হত্যার জন্য দিয়াতের বিধান, নিহত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনের সাথে সমঝোতার বিধান ও সংশয়ের বশীভূত হদ কার্যকর না করার বিধান ইত্যাদি উল্ল্যেখযোগ্য।

সুন্দর ও সাবলীলভাবে পথ চলার বিধান ছাড়াও ‘সাধারণ আবশ্যক বিষয়’ দ্বারা পূর্বোক্ত পাঁচটি মৌলিক বিষয়কে সুরক্ষার জন্য উহার আনুষঙ্গিক বিধানাবলীকেও বুঝায়। যেমন: মদের ব্যবসা, পরনারীদের দিকে কুদৃষ্টি দান, লুণ্ঠিত ভূমিতে সালাত আদায়, খাদ্যদ্রব্য কুক্ষিগত করাসহ ইত্যাকার বিষয়গুলো হারাম হওয়া এরই অন্তর্ভুক্ত। মানুষের এই সাধারণ প্রয়োজন মিটানোসহ জীবন চলার পথ সহজীকরণের ব্যাপারে শরীয়াহর উদারতা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন,

“তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেননি।”

[সূরা হজ্ব: ৭৮]

তিনি আরো বলেন,

“আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য ক্লেশকর তা চান না।”

[সূরা বাকারা: ১৮৫]

৩. শোভা বা সৌন্দর্যবর্ধক বিষয়

শোভাবর্ধক বিষয় বলতে ঐ বিষয়কে বলা হয় যা অর্জিত হলে মানুষের উত্তম আদর্শ, চারিত্রিক মূল্যবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধ প্রতিষ্ঠিত হবে। এর কোনো একটির ব্যত্যয় ঘটলে মানুষের জীবন বিপন্ন হবে না বা জীবন চলার পথে কোনো কষ্ট বা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না; তবে শিষ্টাচার ও সৌজন্য বিঘ্নিত হবে।

এর উদাহরণ হিসেবে ইবাদতের ক্ষেত্রে নাজাসাত বা নাপাকী দূরীকরণসহ সকল প্রকার পবিত্রতা, সতর আবৃত করা, মসজিদে গমনের উত্তম পোশাক পরিধান করা, নফল নামায ও রোযা পালন, যাকাতের পরে অতিরিক্ত দান-খয়রাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মুয়ামালাতের ক্ষেত্রে নাপাক বস্তু বিক্রয় ও একজনের ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে অপরের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ; ফাসিক ব্যক্তিকে সাক্ষ্য ও নেতৃত্বের অযোগ্য ঘোষণা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আদাত বা অভ্যাসগত বিষয়ের মধ্যে পানাহারের শিষ্টাচার বা নিয়ম কানুন মেনে চলা, যেমন: ডান হাতে পানাহার করা, নিজের সন্নিকট থেকে খাওয়া, অপবিত্র বস্তু আহার করা থেকে বিরত থাকা, পানাহারের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা ও অপচয় না করা এবং উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশনা। অনুরূপভাবে অপরাধের শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে কিসাসের কারণে বা যুদ্ধের ময়দানে লাশ বিকৃত না করা; যুদ্ধের ময়দানে নারী, শিশু ও ধর্মযাজকদের হত্যা না করার বিধান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক বিষয়গুলোর সম্পূরক বিষয়সমূহ

পূর্বেই বলা হয়েছে, উপরোক্ত তিন প্রকারের মাসালেহ বা মঙ্গলজনক বিষয়সমূহের রয়েছে কতিপয় সম্পূরক বা পরিপূরক বিষয়, যা ঐগুলোকে সুন্দর ও উত্তম উপায়ে সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে।

মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয়ের সম্পূরকের উদাহরণ হিসেবে নামাযের পরিপূর্ণতার জন্য আযান ও জামায়াতবদ্ধভাবে নামাযের বিধান প্রবর্তন; বৈবাহিক জীবনকে সুখময় করে তোলার জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমতার বিধান ও প্রস্তাবিত স্ত্রীকে দেখার বৈধতা; ব্যভিচার থেকে পরিপূর্ণভাবে হেফাজতের জন্য কোনো নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত না হওয়া, যৌনবাসনা নিয়ে তার দিকে না তাকানো, একাকী কোনো নারীর সফরে বের না হওয়ার বিধান; আকল সংরক্ষণের জন্য মদ হারামের বিধানের পরিপূর্ণতার জন্য নেশাজাতীয় দ্রব্য কম পরিমাণ হলেও তা সেবনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্পদ সংরক্ষণের বিধানের পরিপূর্ণতার জন্য প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় ও অস্তিত্বহীন বস্তু বিক্রয় না করার বিধান উল্লেখ করা যায়।

সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয়ের সম্পূরকের উদাহরণ হিসেবে বেচাকেনার মধ্যে বৈধ শর্তারোপের বিধান, ভুলক্রমে হত্যাকারীর ক্ষেত্রে সহজীকরণের জন্য যে দিয়াতের বিধান দেয়া হয়েছে তার পরিপূর্ণতার জন্য ঐ দিয়াত পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করার বিধান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

শোভাবর্ধক বিষয়ের সম্পূরক হিসেবে নফল সদাকার বিধানের পরিপূর্ণতার জন্য উত্তম মাল থেকে সদাকা প্রদানের বিধান; নফল ইবাদত তথা নামায-রোযা শুরু করলে তা সমাপ্ত করার বাধ্যবাধকতার বিধান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

গুরুত্ব বিচারে মাসালেহ বা মঙ্গলজনক বিষয়সমূহের স্তর

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে নির্দ্বিধায় বলা যায়, পূবোর্ক্ত তিনটি বিষয় ও সেগুলোর সম্পূরকসমূহ গুরুত্ব বিচারে এক ও সমপর্যায়ের নয়। গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিচারে প্রথমে মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয়, তারপর সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয়, তারপর শোভাবর্ধক বিষয়, তারপর এগুলোর সম্পূরক বিষয়সমূহের অবস্থান। আর এ হিসেবে মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় বিষয়ের ক্ষতিসাধন করে এমন সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয়ের সংরক্ষণ করা যাবে না। তদ্রুপ সাধারণ আবশ্যকীয় বিষয়ের ক্ষতিসাধন করে এমন শোভাবর্ধক বিষয়ের সংরক্ষণ করা যাবে না এবং মৌলিক বিষয়ের ক্ষতিসাধন করে এমন সম্পূরকের সংরক্ষণ করা যাবে না। এছাড়া কোনো এক স্তরের সাথে অন্য স্তরের দ্বন্দ্ব হলে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণটিকে প্রাধান্য দিতে হবে। অনুরূপভাবে একই স্তরের দুটি বিষয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে অধিকতর প্রয়োজনীয়টি প্রাধান্য পাবে।

প্রথমটির উদাহরণ হিসেবে চিকিৎসার স্বার্থে কারো সতর অনাবৃত করার বৈধতা উল্লেখ করা যায়। কারণ সতর আবৃত করা সৌন্দর্যবর্ধক আর আত্মরক্ষার স্বার্থে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা মৌলিক অত্যাবশ্যকীয়। এমনিভাবে জীবন বাঁচানোর স্বার্থে অপবিত্র বস্তু বা মৃত প্রাণীর গোশত ভক্ষণের বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। কারণ, অপবিত্র বস্তু খাওয়া থেকে বিরত থাকা সৌন্দর্যবর্ধক আর জীবন বাঁচানোর স্বার্থে তা খাওয়া মৌলিক অত্যাবশ্যকীয়। একইভাবে শরীয়াহর যাবতীয় বিধান পালন কষ্টসাধ্য হলেও দ্বীন রক্ষার স্বার্থে তা পালন করা আবশ্যক। কারণ, দ্বীন রক্ষা মৌলিক অত্যাবশ্যকীয়; আর কষ্ট লাঘব করা সাধারণ আবশ্যকীয়।

আর দ্বিতীয়টির উদাহরণ হিসেবে দ্বীন ও দারুল ইসলাম রক্ষার স্বার্থে এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জিহাদে যাওয়ার আবশ্যকতা উল্লেখ করা যায়। কারণ, জিহাদে গেলে জীবন বিপন্ন হওয়ার শংকা থাকলেও তারচেয়ে দ্বীন ও দারুল ইসলাম রক্ষা অধিকতর জরুরি; যদিও দ্বীন রক্ষা ও জীবন বাঁচানো দুটিই মৌলিক অত্যাবশ্যকীয়। অনুরূপভাবে মদ্যপান ব্যতিরেকে জীবন রক্ষার আর কোনো উপায় না থাকা অবস্থায় মদ্যপানের বৈধতা প্রদান করা এ নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত। কারণ, আকল বা জ্ঞান রক্ষার জন্য মদ্যপান হারাম হয়েছে; কিন্তু প্রাণ রক্ষা করা জ্ঞান রক্ষার চেয়েও অধিক জরুরি। তাই জীবন রক্ষার স্বার্থে মদ্যপান করার বৈধতা দেয়া হয়েছে।

তাছাড়া সম্পূরক বিষয়কে রক্ষা করতে গিয়ে যদি মূল বিষয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে তা বিবেচনায় আনা যাবে না। যেমন: রাষ্ট্রপ্রধান ও নামাযের ইমাম দুজনের ক্ষেত্রেই আদালত বা ন্যায়পরায়ণতা সম্পূরক বিশেষণ; কিন্তু জালিম রাষ্ট্রপ্রধান যদি জিহাদের ডাক দেয় ও পাপাচারী ব্যক্তি যদি নামাযে ইমামতি করে সেক্ষেত্রে প্রথমটিতে মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে ও দ্বিতীয়টিতে জামায়াতের সুন্নাত আদায়ের স্বার্থে শরীক হওয়া আবশ্যক। এখানে আদালত বা ন্যায়পরায়ণতা বিচার করতে গেলে মূল কাজ ব্যাহত হবে।

এ ধরনের আরো লেখা