মসজিদে নববীর গঠনকাঠামো কেমন ছিলো?
মদীনায় রাসূল (সা) কর্তৃক নির্মিত মসজিদটির নকশা বর্তমানে বিশ্বের কোথাও নেই। এমনকি স্বয়ং মদীনাতেও নেই। বর্তমানে আরব বিশ্বে সাধারণত পুরুষদের নামাযের কক্ষ নারীদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক থাকে, বিশেষত পার্ক ও পাবলিক স্পেসগুলোতে। এমনকি একই ভেন্যুতে নারী-পুরুষের পৃথক দুটি নামাযের কক্ষ পাশাপাশি পর্যন্ত থাকে না, হেঁটে যাওয়ার মতো বেশ দূরত্ব বজায় রাখা হয়। আর বড় মসজিদগুলোতে আলাদা স্থানে, পার্শ্ববর্তী ছোট কক্ষে কিংবা মূল বিল্ডিংয়ের সাথে লাগোয়া বারান্দায় নারীরা নামায আদায় করে। নারী ও পুরুষের নামাযের স্থানের ব্যবধান কড়াকড়িভাবে মেনে চলা হয়। মসজিদের মূল কক্ষে নারীদের প্রবেশাধিকার যদি থেকেও থাকে, তাহলে তাও অত্যন্ত সীমিত।
পাশ্চাত্যের যেসব মসজিদে নারীদের নামায পড়ার সুযোগ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে খুব কম মসজিদেই একই কক্ষে সরাসরি পুরুষদের পেছনে নারীদের দাঁড়ানোর ব্যবস্থা রাখা হয়; যেমনটা রাসূলের (সা) সময় এবং তাঁর ওফাতের পর শতাব্দীকাল ধরে প্রচলিত ছিলো। পাশ্চাত্যের মসজিদগুলোতে নারীদের নামায আদায়ের জন্য সাধারণত একটি বিশেষ কক্ষ থাকে। বেজমেন্ট, ছোট কোনো কক্ষ, বারান্দা বা মসজিদের বাইরে, কিংবা মসজিদের সাথে লাগোয়া আরেকটি বিল্ডিংয়ে সাধারণত এ ধরনের ব্যবস্থা থাকে। নারীদের নামাযের স্থানে ইমামের কণ্ঠ শোনার জন্য সাধারণত লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হয়। নারীদের নামাযের স্থানে ইমামকে দেখানোর জন্য সম্প্রতি ক্যামেরা ও স্ক্রিনের ব্যবহার বাড়ছে। এসব মসজিদে নারীদের অংশে প্রবেশের দরজা মসজিদের মূল প্রবেশপথ তথা ‘পুরুষদের দরজা’ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক থাকে।
ভারতীয় উপমহাদেশের মসজিদগুলোতে নারীদের কোনো প্রবেশাধিকার তো নেই, পৃথক কোনো মসজিদের ব্যবস্থাও নেই। ফলে নারীদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে ঘরে নামায আদায় করতে হয়। তবে চীনের মুসলমানদের মধ্যে নারীদের জন্য আলাদা মসজিদের প্রচলন রয়েছে। সেসব মসজিদে নারী ইমামগণ নামায পড়ান।
আফ্রিকায় উপরে বর্ণিত সবকটি মডেলের মসজিদই রয়েছে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীদেরকে পৃথক স্থানে নামায আদায় করতে হয়।
‘পুরুষদের নামাযের স্থান’ থেকে ‘নারীদের নামাযের স্থান’ বিচ্ছিন্ন করে ফেলার কারণে সাতটি সমস্যা তৈরি হয়:
১) মসজিদের মূল কক্ষের (যেটি সবসময় পুরুষদের জন্য বরাদ্দ থাকে) তুলনায় নারীদের অংশটি সবসময় বেশ ছোট থাকে। নারীদের অংশে স্থান সংকুলান না হওয়াটা সাধারণ ঘটনা, বিশেষত জুমার নামায ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময়। পক্ষান্তরে, পুরুষদের নামাযের স্থান তথা মূল কক্ষটি ফাঁকা থেকে যায়। অথচ, বিভিন্ন ইসলামী কার্যক্রমে বর্তমানে নারীরা পুরুষদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি লক্ষ করা যায়।
২) কার্পেট, লাইট, সাউন্ড ডিভাইস এবং অন্যান্য দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, পুরুষদের তুলনায় নারীদের নামাযের কক্ষের সুযোগ-সুবিধা সাধারণত কম থাকে। ফলে নারীদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় কম সমাদৃত হওয়া এবং কম মর্যাদা লাভের অনুভূতি তৈরি হয়।
৩) শিশুরা সাধারণত মা-বোনদের সাথেই থাকে। এ কারণে পুরুষদের তুলনায় নারীদের অংশে বেশি শোরগোল থাকে। ফলে নামায পড়তে আসা নারীদের মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটে।
৪) মূল দরজা তথা ‘পুরুষদের প্রবেশপথ’ দিয়ে নারীদেরকে কখনোই মসজিদে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় না। মসজিদের এক পাশ বা পেছন দিকে তাদের জন্য নির্ধারিত বিকল্প প্রবেশপথটি সাধারণত সংকীর্ণ থাকে।
৫) নারীরা মসজিদের ইমামকে সামনাসামনি দেখতে না পাওয়ায় ইমামের সাথে সরাসরি সংযোগ থাকে না। এ কারণে নামাযে ইমামকে ঠিকমতো অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করে ইমাম সাহেব যদি সরাসরি সেজদায় চলে যান, তাহলে নারীরা বুঝে উঠতে পারেন না। তারা যেহেতু কখনোই ইমামকে দেখেন না, তাই অধিকাংশ নারী মুসল্লী জানেনও না যে কে তাদের ইমাম!
৬) নারীদের অংশে কখনো সাউন্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে জুমার খুতবা শোনা কিংবা নামাযে ইমামকে অনুসরণ করা আর সম্ভব হয় না। ফলে তারা নামায ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
৭) এটি সর্বশেষ পয়েন্ট হলেও বিষয়টি ছোট নয়। সেটি হলো— উপরের সমস্যাগুলোর কারণে বিশেষত অমুসলিম ও নতুন প্রজন্মের মুসলিম তরুণরা মনে করে, “ইসলাম” নারীদেরকে বিচ্ছিন্ন এবং একঘরে করে রাখে। এসব কারণে মসজিদে কিছুটা আসা-যাওয়া থাকলেও সামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ কম থাকে।
শুরুতে আমরা একটি প্রশ্ন তুলেছিলাম— কোনো কিছু ‘ইসলামিক’ হওয়া বলতে কী বুঝায় এবং কীভাবে এ সম্পর্কে জানতে পারবো? এর সম্ভাব্য জবাব হতে পারে— যেহেতু রাসূল (সা) ছিলেন কোরআনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যাকারী এবং মুসলিম সমাজের নেতা, তাই তাঁর সুন্নাহ ও কার্যক্রম দেখেই কোনো কিছু ‘ইসলামিক’ কিনা, তা জানতে হবে।
রাসূলের (সা) জীবদ্দশায় মদীনায় যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিলো, সেই মসজিদের নকশা নিচে তুলে ধরা হলো। প্রথম হিজরীর (৬২২ খ্রি.) রবিউল আওয়াল মাসে মহানবী (সা) মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। এটির দৈর্ঘ্য ছিলো প্রায় ৩৫ মিটার, প্রস্থ ছিলো ৩০ মিটার, আর উচ্চতা ছিলো আনুমানিক আড়াই মিটার। কাঁদামাটির ইট দিয়ে দেওয়াল তৈরি করা হয়েছিলো। মসজিদটির ছাদ দাঁড়িয়েছিলো গাছের কয়েকটি গুঁড়ির উপর। এর উপর বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিলো খেজুর গাছের ডাল-পাতা।
মসজিদে নববীতে তখন ছিলো তিনটি দরজা। একটি ছিলো পূর্বদিকে রাসূলের (সা) হুজরা তথা স্ত্রীদের কক্ষসমূহের বারান্দার সাথে সংযুক্ত। আর অন্য দুটি ছিলো মসজিদের বাইরের খোলা জায়গার দিকে। নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর উপস্থিতি সত্ত্বেও মসজিদের মাঝখানে কোনো ধরনের দেওয়াল, পর্দা বা পার্টিশন ছিলো না। উম্মুল মুমিনীনদের প্রাইভেসি রক্ষার জন্য রাসূলের (সা) হুজরাগুলো পর্দা দিয়ে পৃথক করা ছিলো, কিন্তু মসজিদে নববীর ভেতর পর্দা টেনে নারী-পুরুষের নামাযের স্থান পৃথক করা হয়নি।[1]
নামাযে কাতারবদ্ধ হওয়ার জন্য সাহাবীরা নিচে অঙ্কিত চিত্রের মতো করে দাঁড়াতেন। রাসূলের (সা) ঠিক পেছনে থাকতো পুরুষদের প্রথম কাতার। অন্যদিকে, নারীদের কাতার শুরু হতো মসজিদের পেছনের দেওয়াল থেকে। এভাবে একের পর এক কাতার যোগ হয়ে পুরুষদের দিকে যেতো। যেমনটা চিত্রে দেখানো হয়েছে। এটাই ছিলো রাসূলের (সা) জীবনকালে প্রতিষ্ঠিত সুন্নত।
মসজিদে আগত শিশুরা পুরুষ ও নারীদের কাতারের মাঝখানে কাতারবদ্ধ হয়ে নামায পড়তো। কোনো পৃথক কক্ষ, দেওয়াল বা পর্দার মাধ্যমে পুরুষ ও নারীদের কাতার পৃথক করা হতো না। যদিও তেমনটা করা তখন সম্ভব ছিলো। বরং বিভিন্ন হাদীস থেকে জানা যায়, নারীদের সামনের কাতারের ঠিক সামনেই থাকতো পুরুষদের সর্বশেষ কাতার। এমন বর্ণনা সংবলিত দুটি হাদীস তুলে ধরা হলো:
আসমা (রা) থেকে উরওয়াহ ইবনে জুবাইর বর্ণনা করেছেন। আসমা (রা) বলেন:
“রাসূল (সা) আমাদের সামনে উঠে দাঁড়ালেন এবং আমাদের উদ্দেশ্যে কথা বলা শুরু করলেন। কবরে মৃত ব্যক্তির অবস্থা নিয়ে তিনি কথা বলছিলেন। এমন সময় লোকদের হট্টগোলের কারণে আমি রাসূলের (সা) শেষের কথাগুলো শুনতে পারিনি। এরপর লোকেরা শান্ত হলে আমার সামনে বসা পুরুষটিকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন! রাসূল (সা) বক্তব্যের উপসংহারে কী বলেছিলেন?’ পুরুষ ব্যক্তিটি আমাকে জানালেন, ‘আমাকে ওহীর মাধ্যমে জানানো হয়েছে— তোমরা কবরে এমন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, যা অনেকটা দাজ্জালের ফিতনার মতোই।’”[2]
ফাতিমা বিনতে কায়েস (রা) বর্ণনা করেন:
“… জামায়াতে নামায আদায়ের জন্য মানুষদেরকে আহবান করা হলো। অন্যদের সাথে আমিও নামায আদায় করতে গেলাম। আমি ছিলাম নারীদের সামনের কাতারে, যা ছিলো পুরুষদের সর্বশেষ কাতারের ঠিক পেছনে। নামায শেষে আমি শুনলাম নবীজি (সা) মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, তামীম আদ-দারীর চাচাতো ভাইয়েরা একবার নৌকায় করে সমুদ্রে সফর করছিলো…।”[3]
নারীরা তখন সামনাসামনি বসে ইমামের খুতবা শুনতে পারতেন। ফলে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হতো এবং ইমামের সাথে সহজে যোগাযোগ করা যেতো। এ কারণে আমরা দেখি, রাসূলের (সা) মজলিশে অংশগ্রহণকারী অনেক নারী হাদীস বর্ণনা করেছেন, কেউ কেউ সরাসরি রাসূলের (সা) নিকট থেকে শুনে কোরআনের কোনো আয়াত বর্ণনা করেছেন।
উম্মে হাশিম বিনতে হারিস ইবনে নোমান (রা) বর্ণনা করেছেন:
“আমি কেবল রাসূলের (সা) মুখ থেকে শুনে শুনেই সূরা কাহাফ মুখস্থ করে ফেলেছি। প্রত্যেক জুমার খুতবায় রাসূল (সা) সম্পূর্ণ সূরাটি তেলাওয়াত করতেন।”[4]
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেছেন:
“আমি ‘ওয়াল মুরসালাতি উরফা’ (সূরা মুরসালাত, ৭৭ নং সূরা) তেলাওয়াত করার সময় উম্মে ফজল তা শুনলেন এবং বললেন, “হে বৎস! আল্লাহর কসম, তোমার তেলাওয়াত শুনে মনে পড়ে গেলো, এটিই ছিলো সেই সূরা, যেটি আমি আল্লাহর রাসূলের (সা) নিকট থেকে সর্বশেষ শুনেছি। কোনো এক মাগরিবের নামাযে তিনি এটি তেলাওয়াত করছিলেন।”[5]
রাসূলের (সা) স্ত্রী উম্মে সালামা বলেছেন:
“আখেরাতে হাওযে কাউসার সম্পর্কে আমি লোকজনকে বলাবলি করতে শুনেছি। কিন্তু রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট থেকে এ ব্যাপারে কিছু শুনিনি। একদিন একটি মেয়ে আমার চুল আঁচড়ে দিচ্ছিল, এমন সময় রাসূলুল্লাহর (সা) আহ্বান শুনলাম— ‘হে লোক সকল!’ এই ডাক শুনে মেয়েটিকে বললাম, ‘আমাকে যেতে দাও, রাসূল (সা) কী বলেন শুনে আসি।’ সে আমাকে বললো, ‘রাসূল (সা) তো পুরুষদের ডেকেছেন, নারীদের ডাকেননি।’ আমি বললাম, ‘তিনি মানুষদেরকে ডেকেছেন, আর আমিও তো তাদের একজন।’ তারপর আমি গেলাম এবং রাসূলকে (সা) বলতে শুনলাম: ‘আমি হাওযের নিকট তোমাদের জন্য আগাম অভ্যর্থনাকারী হিসেবে উপস্থিত থাকবো। তাই সাবধান! আমার কাছে তোমাদের এমন কেউ যেন না আসে, যাকে আমার নিকট থেকে এমনভাবে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে, যেভাবে (অন্য কারো) দলছুট উটকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন আমি জানতে চাইবো, কেন তাদের তাড়ানো হচ্ছে? আমাকে বলা হবে, আপনি তো জানেন না, আপনার পরে তারা কী কী নতুন বিষয়ের (বিদয়াত) উদ্ভাবন করেছে। তখন আমিও বলবো— দূর হয়ে যাও!’”[6]
আবু উসমান (রা) থেকে বর্ণিত:
“আমি জানতে পেরেছি, একবার নবীজীর (সা) কাছে জিবরাইল (আ) এসেছিলেন। উম্মে সালামা (রা) তখন তাঁর সাথেই ছিলেন। জিবরাইল (আ) রাসূলের (সা) সাথে কথা বলতে শুরু করলেন। রাসূল (সা) উম্মে সালামাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি এই লোকটাকে চেনো?’ উম্মে সালামা (রা) জবাব দিলেন, ‘ইনি দাহইয়া কালবী (রা)।’ জিবরাইল চলে যাওয়ার পর উম্মে সালামা (রা) বললেন, ‘আল্লাহর কসম! নবীজী (সা) খুতবায় আমাদেরকে জিবরাইলের আগমনের খবরটা জানানোর আগ পর্যন্ত আমি তাঁকে দাহইয়া বলেই মনে করছিলাম।[7]
আসমা বিনতে আবু বকর (রা) থেকে আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন:
“রাসূলুল্লাহর (সা) জীবদ্দশায় একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। … তখন আমি এসে মসজিদে ঢুকলাম। দেখতে পেলাম, রাসূলুল্লাহ (সা) নামাযে দাঁড়িয়ে আছেন। আমিও তাঁর সাথে অংশগ্রহণ করলাম। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কিয়াম করলেন।…[8]
তাই বলা যায়, মসজিদের সর্বোত্তম নকশা হলো রাসূলের (সা) নকশা, যা উপরে প্রদত্ত চিত্র এবং উপর্যুক্ত হাদীসগুলোতে বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (সা) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মসজিদের কাঠামো অনুসারে বর্তমানে প্রচলিত মসজিদগুলোর কাঠামোকে পুনর্বিন্যাস করা হলে প্রচলিত মসজিদগুলোতে সৃষ্ট সমস্যাগুলো অনেকখানি দূরীভূত হবে। পাশাপাশি, বৃহত্তর সামাজিক অঙ্গনে এর গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
নারী, পুরুষ ও শিশুদের নামাযের স্থান নির্ণয়ের সুবিধার্থে মসজিদের মেঝেতে দাগ টানা, কিংবা স্বল্প-উঁচু দেওয়াল দেওয়া যেতে পারে। সংশয়, বিতর্ক ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে এটি একটি সমাধান হতে পারে। কিন্তু নারীদেরকে আলাদা কক্ষে বিচ্ছিন্ন করে রাখা, পর্দার আড়ালে রাখা, কিংবা ইমামকে দেখা ও তার কথা সরাসরি শুনতে বাধা দেওয়াটা রাসূলের (সা) সুন্নতের বিরোধী। যথেষ্ট দলীল-প্রমাণ দ্বারা এটি প্রমাণিত যে নারীরা মসজিদে রাসূলকে (সা) দেখতেন এবং সরাসরি তাঁর কথা শুনতে পেতেন। এটি তাদের নিজেদের শিক্ষা অর্জন এবং অন্যদেরকে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলো।
[মূল: জাসের আওদা, অনুবাদ: জোবায়ের আল মাহমুদ]
***
অন্যান্য পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রেফারেন্স ও নোট:
[1] দেখুন— ওয়াফা আল-ওয়াফা: বি আখবার দারুল মোস্তফা, ১/৭৫-২৪৯।
[2] ‘হট্টগোল’ শব্দটি পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে সহীহ বুখারীর জানাযা অধ্যায়ে, ৩/৪৭৯, এবং বাকি অংশ বর্ণিত হয়েছে সুনানে নাসায়ীতে, ৭/২০০, নাসায়ীতেও বুখারীর সনদ অনুযায়ী বর্ণিত হয়েছে।
[3] সহীহ মুসলিম, ফিতনা অধ্যায়, ৮/২০৫।
[4] সহীহ মুসলিম, জুমার নামায অধ্যায়, ৩/১৩।
[5] সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ২/৩৮৮; সহীহ মুসলিম, নামায অধ্যায়, ২/৪০।
[6] সহীহ মুসলিম, ফাযায়েল অধ্যায়, ৪/১৭৯৫।
[7] সহীহ বুখারী, কোরআনের ফযিলত অধ্যায়, ৭/২৪৪; সহীহ মুসলিম, সাহাবীদের মর্যাদা অধ্যায়, ৭/১৪৪।
[8] সহীহ মুসলিম, সূর্যগ্রহণ অধ্যায়, ৩/৩২।